ঢাকা, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকা জেলার পরিচিতি

প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৬, ২০২৩ ২:৩৬ পূর্বাহ্ণ  

| Hanif Khan

নামকরণ

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা মোঘল-পূর্ব যুগে কিছু গুরুত্বধারন করলেও শহরটি ইতিহাসে প্রসিদ্ধি লাভ করে মোঘল যুগে। ঢাকা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে স্পষ্ট করে তেমন কিছু জানা যায় না। এ সম্পর্কে প্রচলিত মতগুলোর মধ্যে কয়েকটি নিম্নরূপঃ ক) একসময় এ অঞ্চলে প্রচুর ঢাক গাছ (বুটি ফুডোসা) ছিল; খ) রাজধানী উদ্বোধনের দিনে ইসলাম খানের নির্দেশে এখানে ঢাক অর্থাৎ ড্রাম বাজানো হয়েছিল; গ) ‘ঢাকাভাষা’ নামে একটি প্রাকৃত ভাষা এখানে প্রচলিত ছিল; ঘ) রাজতরঙ্গিণী-তে ঢাক্কা শব্দটি ‘পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র’ হিসেবে উল্লেখিত হয়েছে অথবা এলাহাবাদ শিলালিপিতে উল্লেখিত সমুদ্রগুপ্তের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ডবাকই হলো ঢাকা। মোঘল পূর্ব যুগের পুরাতাত্বিক নিদর্শন হিসেবে ঢাকা শহরে দু’টি এবং মিরপুরে একটি মসজিদ রয়েছে। এর মধ্যে প্রাচীনতমটির নির্মাণ তারিখ ১৪৫৬ খ্রিষ্টাব্দ (জোয়াও দ্য ব্যারোস ঢাকাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে দেখতে পান এবং ১৫৫০ খ্রিষ্টাব্দে তার অঙ্কিত মানচিত্রে এর অবস্থান নির্দেশ করেন।

আকবর নামা গ্রন্থে ঢাকা একটি থানা (সামরিক ফাঁড়ি) হিসেবে এবং আইন-ই- আকবরী গ্রন্থে সরকার বাজুহার একটি পরগনা হিসেবে ঢাকা বাজু উল্লিখিত হয়েছে। ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ইসলাম খান চিশতি সুবাহ বাংলার রাজধানী রাজমহল থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন এবং সম্রাটের নামানুসারে এর নামকরণ করে জাহাঙ্গীরনগর।

প্রশাসনিকভাবে জাহাঙ্গীরনগর নামকরণ হলেও সাধারণ মানুষের মুখে ঢাকা নামটিই থেকে যায়। সকল বিদেশী পর্যটক এবং বিদেশী কোম্পানির কর্মকর্তারাও তাদের বিবরণ এবং চিঠিপত্রে ঢাকা নামটি ব্যবহার করেন।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলী ও প্রশাসনিক বিবর্তন

মুসলিম পূর্ব যুগে বর্তমান ঢাকা জেলা অঞ্চল ‘‍বঙ্গ’ নামে পরিচিত প্রশাসনিক অঞ্চলের অন্তর্ভূক্ত ছিল। এর কিয়দংশ কখনো কখনো সমতট এবং কখনো কখনো হরিকল নামে পরিচিত ছিল। এয়োদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজী বঙ্গ দেশে সেন রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে মুসলিম রাজত্বের সূচনা করেন।

মোঘল যুগের পূর্বে বাংলার হিন্দু ও মুসলিম শাসকেরা ঢাকার চারিদিকের বিভিন্ন অবস্থানে তাদের রাজধানী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এসব রাজধানী নগরীর কয়েকটি নিদর্শন এখনো বিক্রমপুর, ভাওয়াল ও সোনারগাঁওয়ে দেখা যায়। ১৫৭৫ সালে মোঘলরা পাঠান সুলতানের কাছ থেকে বাংলার শাসনভার ছিনিয়ে নিলেও তাদেরকে বাংলার ভূস্বামী বা ভূইয়াদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখবার জন্য যথেষ্ঠ বেগ পেতে হয়।

১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর প্রায় একশত বছর ঢাকার মর্যাদা অক্ষুণ্ণ ছিল। এ শহরে ছিল প্রশাসনিক সদর দফতর এবং সুবাহদার ও অন্যান্য কর্মচারীদের বাসস্থান। ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক কারণে মাহজাদা সুজা (১৬৩৯-৫৯) রাজধানী স্থানান্তর করেন। সুবাহদারি স্থানান্তরিত হলে ঢাকা রাজধানীর গুরুত্ব হারিয়ে একটি স্থানীয় প্রশাসনিক কেন্দ্রে পরিণত হয়।

পরবর্তী সুবাহদার শাহ সুজা ঢাকায় নির্মাণ কর্মকান্ড শুরু করেন। শাহ সুজার দীউয়ান মীর আবুল কাশিম ১৬৪৫ খ্রিষ্টাব্দে বড় নামে একটি সুপ্রশস্ত ইমারত নির্মাণ করেছিলেন। ইমারতটির অবস্থান বুড়িগঙ্গার তীরে এবং বর্তমান চকবাজারের দক্ষিণে।

ঢাকার ইতিহাসে বেশ কয়েকটি নির্মাণ কাজের সঙ্গে মীরজুমলা নাম জড়িয়ে আছে, প্রথমে মীরজুমলার গেট পরবর্তী সময়ে যা রমনা গেট নামে পরিচিত হয়। কার্জন হল এর কাছাকাছি ও পুরাতন হাইকোর্ট ভবনের পশ্চিমে ময়মনসিংহ রোডে গেটটি অবস্থিত।

পরবর্তী সুবাদার শায়েস্তা খান ছিলেন একজন খ্যাতিমান নির্মাতা। অবশ্য তিনি একটি কাটরাও নির্মাণ করেন। এটি ছোট কাটরা নামে পরিচিত, শাহ সুজার বড় কাটরা থেকে পৃথক করার জন্য এ নামকরণ। তিনি বেশ কয়েকটি মসজিদ ও সমাধিসৌধও নির্মাণ করেন। মসজিদ গুলির মধ্যে চকবাজার মসজিদ, বাবুবাজার মসজিদ ও সাতগম্বুজ মসজিদ বিখ্যাত। সমাধিগুলির মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বিবি পরীর সমাধি।

নদীপথের পাশে অবস্থানের কারণে ঢাকা প্রাক-মোঘল যুগেই স্থানীয় বাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল। কেননা ঢাকা ছিল একটি উৎপাদন কেন্দ্র।

এখানে উৎপাদিত সুতিবস্ত্র উচ্চমান সম্পন্ন এবং বহির্বিশ্বে ছিল এর প্রচুর চাহিদা। মসলিন নামে পরিচিত বিভিন্ন ধরনের সুতিবস্ত্র বাইরে রপ্তানি হতো। এ সব ক্রয়ের জন্য ইউরোপীয় কোম্পানীগুলো আমদানি করত প্রচুর স্বর্ণ ও রৌপ্য পিন্ড।

বাংলার নওয়াবদের রাজনৈতিক ক্ষমতার পতন এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উত্থান আঠারো শতকের শেষভাগে ঢাকার প্রশাসনিক গুরুত্বকে ম্লান করে দেয়। উপরন্তু, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যিক ও উৎপাদন নীতি নগরীর আর্থিক ভিত্তিকে ধ্বংস করে দেয়।

উন্নয়নের নতুন ধারা এবং সমৃদ্ধির নতুন যুগের সূত্রপাতের মাধ্যমে ১৮৪০- এর দশক নগর ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করে। নগর উন্নয়নের এ যাত্রা তখন থেকেই অব্যাহতভাবে চলতে থাকে। প্রশাসনিক ক্রমবৃদ্ধি ইতঃপূর্বে ঢাকা জেলা প্রশাসনের কেন্দ্র ছিল। এটি ১৮২৯ সালে ঢাকা বিভাগ নামে একটি বৃহৎ বিভাগের সদর দফতরে পরিণত হয়। এরপর ঢাকার প্রশাসনিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ১৮৮৫ সালের মধ্যে বঙ্গপ্রদেশে কলকাতার পরে ঢাকা নগরীকে সর্ববৃহৎ বেসামরিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়।

১৯০৫-১১ সালের দিকে ঢাকার প্রশাসনিক গুরুত্ব নাটকীয়ভাবে আরও বৃদ্ধি পায় যখন এটিকে পূর্ব বাংলা ও আসাম নামে নতুন প্রদেশের রাজধানী করা হয়। একটি হাইকোর্ট এবং একটি সচিবালয়সহ একজন লেফটেন্যান্ট গভর্নর নিযুক্ত করা হয়।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান এবং স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর পূর্ব বাংলা নামে নতুন প্রদেশের রাজধানী হওয়ায় ঢাকার উথানে অধিকতর স্থায়ী উন্নয়ন সাধিত হয়। এ সময় হতে ঢাকা শুধু এ নতুন প্রদেশের প্রশাসনিক সদর দফতরই ছিল না বরং এখানে আইন পরিষদ এবং জাতীয় সংসদের অধিবেশন বসত।

অনেক সংগ্রাম, ত্যাগ এবং রক্তের বিনিময়ে নয়মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে ঢাকা রাজনৈতিক , প্রশাসনিক কার্যকলাপ এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্ররূপে মর্যাদা লাভ করে।

                                                                                                                                সর্বশেষ আপডেটঃ

১০/০৬/২০১৪

কর্মকর্তাবৃন্দ

অনুসন্ধান করুন

#ছবি
কর্মকর্তাবৃন্দ
শিরোনামপদবিঅফিস শাখাই-মেইল , মোবাইলফোন (অফিস)ব্যাচ (বিসিএস)
মোহাম্মদ মমিনুর রহমানজেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটdcdhaka@mopa.gov.bd
মোবাইল নম্বর: ০১৭১৩০৪৮৫৮০
০২-২২৩৩৮৯৭৮৬২২
মো: আবু জাফর রিপনউপপরিচালক, স্থানীয় সরকারdhakaddlg@gmail.com
০১৭১৮০৮২৮৭২ ০১৭৬২৫২৪২৮২ (ADLG)

০২৪৭১১৬৪৩১২৭
শাহনাজ সুলতানাঅতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল.এ)shahnaz.sultana@gmail.com, adcladhk@gmail.com
০১৯৩৩-৪৪৪০০৫
০২-৪১০৫১৫০৪২৭
মমতাজ বেগমঅতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা্ ও আইসিটি)momosarowar@gmail.com
০১৭৫৯৮৮৮৮০৫
০৪১০৫১৫০৫২৯
কাজী হাফিজুল আমিনঅতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)adcgeneraldhaka@gmail.com
০১৭১৫৮৩২৫৮৫, ০১৯৩৩৪৪৪০০২
০২-৪১০৫১৫০৩৩০
মোঃ শিবলী সাদিকঅতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)shibli.sadique@yahoo.com
০১৯৩৩-৪৪৪০০৩
৪১০৫১৫০৬৩১
এ. কে. এম হেদায়েতুল ইসলামবিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটadmdhaka2018@gmail.com
০১৯৩৩৪৪৪০০৬
০২৪১০৫১৫০৭৩১
তামান্না আক্তার শারমিনসিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (এল.এ শাখা-০৪)tamannasharmin1988@gmail.com
০১৭১৬০৯২৬৭৬

০২-৪১০৫১০০৬৩৪
ইমতিয়াজ মোরশেদসিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (সাধারণ শাখা)emti.arch@gmail.com
০১৭৬৩৯৪৪৭৩৮, ০১৯৩৩৪৪৪০১৩
০২৪৭১১৬৯৪৯৩৪
১০মোঃ আদনান চৌধুরীসিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (জেনারেল সাটিফিকেট শাখা)adnan161533@gmail.com
০১৯১৩২১৮২১৩
৩৫
১১মোহাম্মদ রহমত উল্লাহসিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (নেজারত শাখা) (ব্যবসা বাণিজ্য শাখা)rafimath71@gmail.com
০১৭০৭০৮১১৩২ (ব্যক্তিগত) ০১৯৩৩৪৪৪০০৭ (দাপ্তরিক)
০২৪১০৫১৫০৯ (নেজারত শাখা) ০২৪১০৫১৫১৭ (ব্যবসা-বাণিজ্য শাখা)৩৫
১২তাসনীম জাহানসিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (রেকর্ডরুম শাখা)tasjahan45@gmail.com
০১৮১৫৫৫২৭৭৩
৩৫
১৩কে.এম. রফিকুল ইসলামসিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (বিচার শাখা)kmria08@gmail.com
০১৭৪৭৪৫৮৯৮৯
০২৪১০৫১০৬৬৩৫
১৪অরুন কৃষ্ণ পালসিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (আইন ও প্রশাসন প্রশিক্ষণ কোর্সে আছেন)aruncse2007007@gmail.com
০১৭৭৫২৮০০৯৩
৩৫
১৫সুবীর কুমার দাশসিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (আইসিটি শাখা)subir785@gmail.com
০১৩২৫৬৭৬৬৩৫
০২-৪১০৫১৫১৪৩৫
১৬সাখাওয়াত জামিল সৈকতসিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (অর্পিত সম্পত্তি শাখা ও কোর্ট অব ওয়ার্ডস)saikatenglish@gmail.com
০১৭২২৮৮০৭৭৮
৩৫
১৭মামনুন আহমেদ অনীকসিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (রাজস্ব শাখা)mamnoonctg@gmail.com
০১৭৩২৩৫৩৩২৮
০২৪১০৫১৫০৮৩৫
১৮মোছাঃ আকলিমা বেগমসিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (এল, এ শাখা-০৫)a.munny47@gmail.com
০১৭২২৭৩৩৬৭৬
০২৪১০৫১৫০৮৩৫
১৯ইরতিজা হাসানসিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (এল.এ শাখা-১)irtiza.bds.adm@gmail.com
০১৭৪২৪১৫৪৮৫
৩৫
২০মো: আব্দুল্লাহ আল রনীসিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (ট্রেজারি শাখা)ronyshah37@gmail.com
০১৯১৬২৭২৪২৪
৩৫

বিনোদন, লাইফস্টাইল, তথ্যপ্রযুক্তি, ভ্রমণ, তারুণ্য, ক্যাম্পাস ও মতামত কলামে লিখতে পারেন আপনিও – example@gmail.com ইমেইল করুন  

সর্বশেষ

জনপ্রিয় সংবাদ