ঢাকা, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোবাইল ফোনে ধংস হচ্ছে শিশুদের জীবন

প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ১৯, ২০২৩ ৬:০৩ অপরাহ্ণ  

| Hanif Khan

সালেহ মোবিন

খেলার জন্য আপনার আদরের সোনা মনির হাতে স্মার্ট ফোনটি তোলে দিচ্ছেন না তো?
যদি একবার দিয়ে অভ্যাস করে ফেলেন তা হলে জেনে রাখুন নিজ হাতে আপনার সন্তানের জীবন ধংস করেছেন আপনি।

আর সাময়িক আনন্দের জন্য এই ভয়াবহ কাজটি বেশি ভাগ করে থাকেন মায়েরা। আর ছেলের বিপদ ডেকে পরে সামলাতে না পেরে কান্না ও করেন বেশি সেই মায়েরা।

আমার ছেলে মিরাজ পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। মোবাইল ছাড়া এক বেলাও ভাত খেতে পারে না। মেয়ে মালিহা নার্সারিতে পড়ে। তার ও একই অবস্থা। আরেক ছেলে মাহাথির ২ বছরের কাছাকাছি বয়স। সেও গজল না শুনলে কোনো খাওয়াই মুখে তোলে না।

আমি শুধু আমার ঘরেরটা দেখি বলে বললাম।এমন ঘটনা এখন ঘরে ঘরে চলছে।
তার পর ধরুন ১০ থেকে ১২/১৩ বছরের ছেলে মেয়েরা প্রচণ্ডভাবে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন গেইম আর ইউটিউবে ওল্টা পাল্টা ভিডিও দেখে দেখে লেখাপড়া বাদ দিয়ে সারা দিন মোবাইল নিয়েই পড়ে থাকে।

সমাজের কোমলমতি ছেলেমেয়েদের এমন ধংসের জন্য দায়ী কিছু মা-বাবা। তারা অল্প বয়সে ছেলে মেয়েদের হাতে মোবাইল তুলে দিয়ে বিপদ ডেকে আনছেন নিজে।

আমাদের মা-বাবাদের এখন থেকে সাবধান হতে না পারলে সামনের দিনগুলো আরো কঠিন হয়ে দেখা দেবে। আপনার সন্তানের বয়স ১৫/১৬ বছর হয়ে গেলে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

আমার মামার এক ছেলে এক মেয়ে। সারা জীবন সৌদি আরবে কাটিয়েছেন ছেলেমেয়েদের ভালো রাখার জন্য। এক ছেলে হওয়ায় ভালো পড়াশোনা করার জন্য গ্রাম থেকে ঢাকা চলে আসেন। মতিঝিল একটি ভালো স্কুল থেকে এসএসসিতে ভালো রেজাল্ট ও করে।সমস্যা শুরু হয় কলেজ ভর্তির পর।সারা দিন মোবাইল আর মোবাইল। মোবাইল ছাড়া কিছুই বোঝে না।মামা আমাকে অনেকবার ফোন করেছেন সৌদি আরব থেকে তার ছেলেকে বোঝানোর জন্য। আমি মোবাইলে কল দিলে কখনো সে ধরে না। তাই আমি আর গুরুত্ব দেইনি। মামার আবারও আকুতি আমি যেন বাসায় গিয়ে বুঝিয়ে আসি।অফিসের ব্যস্ততা ও বাসা দূরে হওয়ায় আমার আর যাওয়া হলো না।

মামা বললেন, সারা দিন মোবাইল নিয়ে ঘুরে বলে রাগ করে তার বইখাতা বস্তায় ভরে রেখে দিল। তবুও সে ১ মাসে তার বইগুলো বস্তা থেকে বের করেনি।
ওই মামা গত কোরবানির ঈদের এক দিন আগে সৌদিতেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
যে ছেলের সুখের জন্য জীবনের শেষ দিনগুলো বিদেশে কাটিয়েছেন ওই সন্তান হয়তো এখন বুঝবে বাবা কী ছিল। সন্তানের এমন অধঃপতন মামা সহ্য করতে পারতেন না বলে শুধু কান্না করতেন।
সমাজে এমন উদাহরণ অনেক অনেক আছে।

তাই আসুন আমরা এখন থেকে সচেতন হই। নইলে আপনার আমার সন্তানের জন্য ও মামার মতো সারা জীবন কাঁদতে হবে।

বিনোদন, লাইফস্টাইল, তথ্যপ্রযুক্তি, ভ্রমণ, তারুণ্য, ক্যাম্পাস ও মতামত কলামে লিখতে পারেন আপনিও – example@gmail.com ইমেইল করুন  

সর্বশেষ

জনপ্রিয় সংবাদ